ইয়াবা ব্যবসায়ীরা আত্মগোপনে

ডেস্ক রিপোর্ট :

অধিকাংশ খুচরা ইয়াবা ব্যবসায়ি এখন আত্মগোপনে চলে গেছে। যাদের অধিকাংশ এখন পরিবার ছাড়া বাইরের সকলের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রেখেছে। তবে গোপনে ইয়াবা ব্যবসা অব্যাহত রেখেছে। আইনশৃংখ্য বাহিনীর অভিযান সীমিত হয়ে আসলে তারা এলাকায় ফিরবে এমনটি জানা যায় বিভিন্ন সুত্রে।

হঠাৎ আঙ্গুল ফুলে কলাগাছে পরিণত হওয়া কক্সবাজার শহর ও জেলার বিভিন্ন উপজেলার অসংখ্য ইয়াবা ব্যবসায়ি এখন অদৃশ্য হয়ে গেছে। কোটিপতি বনে যাওয়া এসব ইয়াবা ব্যবসায়িদের উত্থান দেখে অনেকেই বিস্মিত হলেও তারা সব সময় ছিল ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। অভিযোগ রয়েছে এতোদিন তারা প্রশাসনের সাথে সখ্যতা রেখে ইয়াবা ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে।

জানা যায়, কক্সবাজার শহরের গাড়ির মাঠ, হলিডের মোড়, কলাতলী, বাস টার্মিনাল, বাজারঘাটা, লালদিঘীর পাড়ে যারা নিয়মিত ইয়াবা ব্যবসা করত তারা এখন অদৃশ্য হয়ে গেছে।

কক্সবাজার শহরের গাড়ির মাঠ এলাকার একজন স্ক্রাব ব্যবসায়ি নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন যারা স্ক্রাব ব্যবসায়ীদের সাথে যোগসাজসে দেশের বিভিন্ন স্থানে ইয়াবার বড় চালান পাচার করত তা এখন বন্ধ রেখেছে। এমন ঝুকি কেউ নিচ্ছে না। তবে ছোট-খাট চালান এখনো অব্যাহত আছে। তারা ব্যবসা বন্ধ করেনি। এখন খুচরা ব্যবসার দিকে মন দিয়েছে ইয়াবা ব্যবসায়িরা।

বাসটার্মিনাল এলাকার পরিবহন ব্যবসায়ি সাহাব উদ্দিন জানিয়েছেন, এই এলাকার অধিকাংশ ইয়াব ব্যবসায়ী এখন অদৃশ্য হয়ে গেছে। থাকলেও কেউ বাসা থেকে বের হচ্ছে না। অনেকেই বিভিন্ন দেশে চলে গেছে। এরা কেউ সরকারের আহবানে আত্মসমর্পন করবে না। এরা ছাড়াও কক্সবাজার শহরের কোন এলাকায় কোন চিহ্নিত ইয়াবা ব্যবসায়িকে কার্যত দেখা যায় না। যারা গ্রাম থেকে এসে ব্যবসা করত তাদের অধিকাংশই এখন গ্রামে চলে গেছে।

চকরিয়া বদরখালী বাজারের ব্যবসায়ি নুরুল আমিন জানিয়েছেন ইতোমধ্যে বদরখালীর প্রতিটি ওয়ার্ডে ইয়াবা প্রতিরোধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে কমিটি গঠন করা হয়েছে। ৯টি কমিটির মাধ্যমে এখন তালিকা প্রণয়ন করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ওই তালিকার ৫ জনকে পুলিশ ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার করেছে।

এই এলাকাটি বাণিজ্যিক এলাকা হওয়ায় ইয়াবা ব্যবসায়িরা এখান থেকেই বিভিন্ন এলাকায় ইয়াবা পাচার করে। বিশেষ করে মহেশখালীর হোয়ানক, কালারমারছড়া, শাপলাপুর ও মাতারবাড়িতে পাচার হয় ইয়াবা। কিছুদিন আগে কালারমারছড়ার উত্তর নলবিলার হাসান রাসেল নামের একজন ইয়াবা ব্যবসায়িকে মহেশখালী থানা পুলিশ ২৫০০ ইয়াবা নিয়ে গ্রেপ্তার করলেও এখন মুক্তি পেয়ে নির্বিঘেœ চালিয়ে যাচ্ছে ইয়াবা ব্যবসা। মুলত উত্তর নলবিলা ও চালিয়াতলী ভিত্তিক  ইয়াবা ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছে এই হাসান রাসেল। কালারমারছড়া ও হোয়ানক ইউনিয়নে আরো ৪ জন খুচরা ইয়াবা ব্যবসায় জড়িত। তারা এখন অনেকটা আড়ালে চলে গেছে।

বদরখালী পুলিশ ফাঁড়ির আইসি মোহাম্মদ ইসমাঈল জানিয়েছেন, তথ্য পেলেই কোন ইয়াবা ব্যবসায়িকে ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। ইতোমধ্যে কয়েকজন শীর্ষ ইয়াবা ব্যবসায়িকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মুলত মহেশখালী ও বদরখালী ইয়াবা পাচারের প্রধান রুটে পরিণত হয়েছে।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এ কে এম মাসুদ হোসেন জানিয়েছেন, ইয়াবা বিরোধী পুলিশের অভিযান আরো জোরদার হবে। দেশ এবং জাতিকে মাদকমুক্ত করতে এর বিকল্প নেই।